নিঝুম দ্বীপ,নোয়াখালী জেলা
হরিণের অভয়ারণ্যে নিঝুম দ্বীপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর
Nijhum Dwip জাতীয় উদ্যান,নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত।
২০০১ সালে বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপ কে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষনা করা হয়।
নিঝুম দ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থান নিঝুম দ্বীপ মেঘনা মোহনায় অবস্থিত।
নিঝুম দ্বীপের তিন দিকে বঙ্গোপসাগর এক দিকে মেঘনা নদী ঘিরে রেখেছে।
নিঝুম দ্বীপের ইতিহাস নিঝুম দ্বীপ ১৯৪০ সালে মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠে,
নিঝুম দ্বীপে ১৯৫০সালে জনবসতি গড়ে উঠে।নিঝুম দ্বীপের আয়তন প্রায় ৯১
কিলোমিটার.নিঝুম দ্বীপের অপর নাম বাল্লার চর,চর ওসমান,কামলার চর,
এবং মৌলভীর চর।চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ গঠিত হয়।নিঝুম দ্বীপের
অপর নাম ইছামতীর চর নামে ও ডাকা হয়।নিঝুম দ্বীপ জাহাজমারা
ইউনিয়ন হতে পৃথক হয়ে স্বতন্ত্র ইউনিয়নের মর্যাদা লাভ করে।
নিঝুম দ্বীপে কোন মানব বসতি ছিলনা। হাতিয়া,শাহবাজপুর,রামগতি নদী
ভাঙ্গনের কারনে কিছু মানুষ বসবাস স্থাপন করেছিল নিঝুম দ্বীপে।
১৯৭০সালের ভয়াবহ প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়ে তসনছ করে দিয়েছিল।বসবাসরত কোন মানুষ
জীবিত ছিল না।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (আমিরুল ইসলাম)প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি
দেখার জন্য গিয়েছিলেন,আক্ষেপের সাথে বলেছিল হাইরে নিঝুম দ্বীপ।দ্বীপের
মাঠি চিকচিকে বালুকাময়,জেলেরা বালুর চর নাম দিয়েছিল।
দ্বীপটিতে মাঝে মধ্যে বালু জমে টিলা হয়ে যায় তাই লোকমুখে বেশ কিছু নামে দ্বীপটি
কে ডাকে স্থানীয় মানুষেরা বাইল্ল্যার ডেইল বা বাল্লারচর।নিঝুম দ্বীপের আয়ত
প্রায় ৩৬৯৭০.৪৫৬ হেক্টর জমি,১৯৯৬সালের তথ্য অনুযায়ী।নিঝুম দ্বীপে
সরকারি সহায়তায় ৯টি গুচ্ছ গ্রাম তৈরি করা হয়েছে।এছাড়াও এখানে
ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে মানুষ,নিঝুম দ্বীপের
জনসংখ্যা প্রায় ২৫০০জন।২০১১ সালের আদমশুমারীর তথ্য অনুযায়ী।
স্থল ভাগ ৩৮.৬৫ বর্গ কিমি(১৪.৯২ বর্গমাইল)জলভাগ ১২৪.৮১ বর্গকিমি(৪৮.১৯ বর্গ মাইল)
মোট সীমানা ১৬৩.৪৫ বর্গ কিমি(৬৩.১১ বর্গমাইল)নিঝুম দ্বীপের গাছপালা এখানে বেশ
কয়েক জাতের গাছ পালা রয়েছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ,গর্জন।গেওয়া।তেল সুন্দর।
কড়ই।বাশ।মান্দার গাছ,শেওড়া গাছ,নোনা ঝাউও।
নিঝুম দ্বীপের জীববৈচিত্র্য,নিঝুম দ্বীপে ১৯৭০ সালে বন বিভাগ হরিণের অভয়ারণ্যে
হিসেবে ঘোষণা করেন।এখানে হরিণের পাশাপাশি হাতির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত।
এখানে বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব দেখা মিলে।নিঝুম জাতীয় উদ্যানে এক সাথে
দুটি হরিণ বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ হতে ছাড়া হয়।বর্তমানে প্রায় ২২,০০০ হাজার রয়েছে।
নিঝুম দ্বীপের প্রধান বন্যপ্রাণী চিত্রা হরিণ।এছাড়া এখান রয়েছে নিশিবক,দেশি
কানিবক,গোবক,দেশি পানকৌড়ি,ধুসর বক,চিত্রল হরিণ,মেছোবাগ,উদবিড়াল,
কাদাখোচা,বালিহাস,কালোহাস,কোড়া,তিলা লাল্পা,তিলা সবুজপা।সরীসৃপের মধ্যে
রয়েছে গুইসাপ,সামুদ্রিক কচ্ছপ।নিঝম দ্বীপে কচ্ছপের প্রজননস্থল হিসেবে
সু-পরিচিতি।অতিথি পাখির মিলন মেলা দেখা মিলে।জলচর,পানিকাটা পাখি,
বিদপগ্রস্থ পশুপাখি এসে আশ্রয় নেয়।
পর্যটকরা নিঝুম দ্বীপে কি দেখবেন,যারা নিঝুম দ্বীপের সৌন্দর্য
উপভোগ করতে যাবেন,ভ্রমনপিপাসুদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু ফ্যাসিলিটি।
নিঝুম দ্বীপে জেনারেটরের,রাতে ক্যাম্পিং,ভাল মানের খাবার হোটেল,দ্বীপে
বেশ কিছু রিসোর্ট গড়ে উঠেছে পর্যটকরা বুকিং দিয়ে রাতের অপরুপ
সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
দর্শনীয় স্থান নিঝুম দ্বীপ?কমলা দ্বীপ ভ্রমনে গেলে আপনি সেখানে প্রচুর পরিমাণে
ইলিশের দেখা পাবেন।কমলার দ্বীপের ছোট ছোট দ্বীপ গুলো ঘুরে দেখতে পাবেন।
চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর,বিকাল বেলা সন্ধ্যার আগে,হাঁটলে হরিণের দেখা মিলে।
চোয়াখালী সমুদ্র সৈকত।চোয়ালহালীতে ভোর বেলা গেলে হরিণের বিচরন দেখা মিলে।
ম্যানগ্রোভ বন।বন নিঝুম দ্বীপের একটি বনাঞ্চল।
নামার বাজার সমুদ্র সৈকত।নামার বাজার থেকে সমুদ্র থেকে সূর্য উদয় এবং সূর্যাস্ত
উপভোগ করা যায়।দমার চর।দমার চরে খুব সকালে অনেক গুলো পাখির দেখা মিলে।
নিঝুম দ্বীপ বিখ্যাত হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে এখানে মৎস আহরণ ও সবুজ
বেষ্টনী অঞ্চল অতিথি পাখির মিলনমেলা আগমনের জন্য।
কিভাবে যাবেনঃবাংলাদেশের যে কোন জেলা থেকে নোয়াখালী যেতে পারবেন বাস,
ট্রেইন,লঞ্চ দিয়ে,নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যান ঘাটে হাতিয়ার উদ্যেশে
নিঝুম দ্বীপে প্রতিদিন সকাল আটটায় লঞ্চ যাতায়াত করে।
কোথায় থাকবেনঃ হাতিয়া দেখা শেষ হয়ে গেলে নোয়াখালী শহরে এসে থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন-নোয়াখালী শহরে ভালমানের খাবার হোটেল আছে সেখানে খেতে পারবেন।