লালাখাল

সিলেটের লালাখাল ভ্রমণ, স্বচ্ছ নীল পানি

সারি নদী সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল এলাকা দিয়ে ভারত থেকে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশের সিলেটের লালাখালের বুক দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলায় বয়ে চলে গেছে। নীল সবুজ স্বচ্ছ পানির মিলন মেলা দেখা মিলে। সুরমা - কুশিয়ারা নদীর মিলনস্থলে গিয়ে মিশে গেছে।
লালাখাল সারি গোয়াইন নদী ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি থেকে উৎপত্তি, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি হয়ে বাংলাদেশের সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল এর উপর দিয়ে নদীটি সিলেটের সুরমা নদীতে মিশে গেছে। ৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য।
আকাঁবাকাঁ সারি নদীতে বেশ কয়েকটি আকাঁবাকাঁ পয়েন্ট রয়েছে। স্বচ্ছ জলের দেখা মিলে নদীটিতে। বিখ্যাত পর্যটক, ইবনে বতুতা সারি নদী দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। সারি নদীর সাথে খাল যুক্ত, তবে সারি নদী নদীরই একটি অংশ। 
সারি গোয়াইন নদী বাংলাদেশ-ভারত একটি আন্ত:সীমান্ত নদীনদীটি সিলেট জেলার উত্তর - পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। নদীর দের্ঘ্য ৮৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১১৯ মিটার। নদীটি প্রকৃতি সর্পিলিকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক নদীটির নম্বর ৯৭ সারি গোয়াইন নদী।

সিলেট সারি নদী অর্থনৈতিক গুরুত্ব জৈন্তাপুর সারিঘাট পয়েন্ট থেকে ২ কিলোনিটার বিস্তৃত  লালাখালের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত। প্রতিদিন স্থানীয় গ্রামবাসীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্ম ব্যস্ত থাকে৷ সারি নদীতে পাথর, বালু, উত্তোলন করে,কেউ বা আবার সারি নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে সারি নদী বর্তমানে বেশ কিছু মানুষ তারা নিয়িমিত নৌকা দিয়ে সারি নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করায়। সারি নদী মিশরের নীল নদের পানির মত স্বছ নীল থাকায়। সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটক, তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকে স্থানীয় নৌকার মাঝিরা। লালাখালের দু পাড়ে বেশ কিছু হোটেল এন্ড রিসোর্ট গড়ে উঠেছে।  

দেখার মত কি আছে সারি নদীতে বাংলাদেশের একমাত্র একটা নদীকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠেছে, এই নদীটি হচ্ছে সারি নদী, জৈন্তাপুর সারিঘাট নৌকা পয়েন্ট থেকে লালাখালের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার নদী পথে যাওয়ার সময় লালাখানের সারি নদীর দু পাশে অসংখ্য বাড়িঘর,গাছ -পালা, পশু পাখির দেখা মিলে। জিরো পয়েন্ট থেকে সারিঘাট পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আকাঁ বাকাঁ পয়েন্ট রয়েছে, পয়েন্ট গুলোর মাঝে পানির নীল, সবুজ এবং পানির মধ্যে ভেসে থাকা ফেনা সাদা ধবধব দেখা মিলে এক পলক দেখলে যে কারও ভালো লাগবে। জিরো পয়েন্ট যায়ার আগে নৌকা দিয়ে লালাখল বাজার দেখা মিলে,এখানে রয়ছে খাদিম রিসোর্ট এবং লালখাল নদীর পাশের পাশেই আরেক রিসোর্ট দেখতে পাবেন৷ লালাখাল বাজার থেকে নদী পাড় হয়ে  চা বাগানের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। যদি পুরু নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন তাহলে যাওয়ার পথে বিজিবি ক্যাম্প নৌকা থেকে দেখতে পাবেন।লালাখাল জিরো পয়েন্ট যাওয়ার পর সেখানে মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে নেমে আসা বিশাল সারি নদীর মোহনার দেখা মিলে। বাংলাদেশ অংশে এখানে বর্ডার ক্রস চিহ্ন রয়েছে। জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ অংশে বেশ কিছু চা শ্রমিকের ঘর বাড়ি রয়েছে পাহাড়ের টিলায়। সব কিছু মিলিয়ে লালাখল সারি খোয়ইন নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করার মত।
সারি নদী যেভাবে যাবেন, বাংলাদেশের যে কোন যায়গা থেকে বাস অথবা ট্রেইন দিয়ে সিলেট কদম তলী বাসস্টান্ড নামতে হবে। বাস স্টান্ডের পাশেই অবস্থিত ট্রেইন স্টেশন। রাজধানী ঢাকা থেকে নিয়মিত বাস,সায়েদাবাদ,মহাখালী থেকে ছুটে আসে। ট্রেইন দিয়ে যেতে চাইলে কমলাপুর রেলস্টেশন অথবা বিমানবন্দর থেকে যেতে পারবেন।ট্রেইন অথবা বাসের ভাড়া বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী টিকেট এর দাম নিবে।

সিলেট থেকে যেভাবে যাবেন সিলেট শহর থেকে লালাখালের দূরুত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। কদমতলী বাস স্টান্ড থেকে সি এন জি দিয়ে আম্বরখানা পয়েন্ট অথবা সোবহানীঘাট আসবেন। এখান থেকে বাসে করে যেতে পারবেন জৈন্তাপুর সারিঘাট পয়েন্টে, ভাড়া ৪০-৬০ টাকা নিবে। সারিঘাট থেকে দু ভাবে জিরো পয়েন্ট যেতে পারবেন। সারি ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে লালাখাল জিরো পয়েন্ট যেতে হয়, যাওয়ার পথে নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করবেন। জিরোপয়েন্ট বলতে সেখানে কিছু নাই শুধু নদী। যা দেখার সারিঘাট থেকে যাওয়ার পথেই দেখতে হবে।

বিকল্প রাস্তা জৈন্তাপুর, লালাখাল বাজারে যদি যেতে চান তাহলে টম টম দিয়ে যেতে হবে। টম টম ভাড়া ২০ টাকা জনপ্রতি। লালাখাল বাজার থেকে নৌকা ভাড়া করে সারি নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪