আলী রাজার জমিদার বাড়ি,বানিয়াচং

   বানিয়াচং রাজবাড়ি





বানিয়াচং রাজবাড়ী গোবিন্দ সিংহ প্রতিষ্ঠান করেছিলেন। পরবর্তীতে গোবিন্দ সিংহ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার একটি গল্প রয়েছে। জগ্ননাথপুর কে বানিয়াচংয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রায়ই জগনাথপুরের রাজা বিজয় সিংহের সাথে যুদ্ধ হত। এক সময় বিজয় সিংহ যুদ্ধে পরাজিত হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বিজয় সিংহ দিল্লির বাদশা সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে বিচার প্রার্থী হন। গোবিন্দ সিংহ কে ধরে নেওয়ার জন্য পেদা পাঠায়। তখন গোবিন্দ সিংহ পেদা কে পদাঘাত করে নিজ রাজ্য রক্ষার একটি কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। রাজ্যের চারদিকে নদীসম গড় খাই খনন করেন।


রাজা গোবিন্দ কে ধরে নেওয়ার জন্য মনি বিক্রেতা সেজে একদল লোক নৌকা যোগে রাজ্যে প্রবেশ করে।মনি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণে গোবিন্দ সিংহ নৌকায় উঠলে রাজা কে বন্ধি করে দিল্লির সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে নিয়ে যায়। রাজা গোবিন্দের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন সম্রাট। রাজা গোবিন্দ আদেশ রক্ষা করে তার পন্ডিদের সাথে কথা বলার আরজি পেশ করে সম্রাটের কাছে। প্রন্ডিত কে বানিয়াচং থেকে নেয়া হয়। গোবিন্দ রাজা তার পন্ডিদের পরামর্শে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। রাজ দরবারে  আর্জি পেশ করেন ধর্ম মতে পুনরায় বিচার কার্যক্রম সম্পাদন করার আবেদন করেন, তখন আওরঙ্গজেব বিচার কাজ শুরু করলে রাজা গোবিন্দের জবানবন্দি পুনরায় দেওয়ার জন্য ডাকা হয়।


জবান বন্ধি দেওয়ার সময় সম্রাট কে বলেন আমার  বিচার হয়ে গেছে, তখন সম্রাট চমকে যায় কি বল বিচার হয়ে গেছে ।মানে তখন রাজা গোবিন্দ বলেন আমি হিন্দু থেকে মুসলিম হয়েছি একজন হিন্দু থেকে মুসলিম হলে তার এমনিতে মৃত্যুদন্ড সমমান  শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হয় হিন্দু শাস্ত্রমতে। তখন আওরঙ্গজেব গোবিন্দ সিংহের  নাম রাখেন হাবিব খাঁ, শাহী দরবার থেকে রাজ্যার  সনদসহ, শেখ, সৈয়দ, মোঘল, পাঠান, তাতীঁ, জেলে, কামার, কুমার, সহ প্রায় তিনশ পরিবার নিয়ে বানিয়াচং প্রত্যাবর্তন করেন। আনুমানিক ১৫৫৬ সালে তখন তিনি রাজবাড়ি পূর্ননির্মাণ করেন। বাড়ির ইতিহাস আইনি আকবরী, বাহারি স্থান ই গায়েবী, সিলেটের ইতিবৃত্ত এবং ঐতিহাসিক বানিয়াচং  ও কিংবদন্তি, জালালাবাদের কথা, বানিয়াচং দর্পণ সহ অনেক গ্রন্থে উল্লেখ্য রয়েছে।


আলীরাজা বানিয়াচং রাজবাড়ীর সবচেয়ে ক্ষমতাবান রাজা ছিলেন আলী রাজা। বানিয়াচং রাজবাড়ীতে, যারা ঘুরতে যায় তারা রাজার মুল বসত ভিটা সহ একটি পুরুনো মঠ, উত্তরে একটা দিঘী, দিঘীতে নামার জন্য পাঁকা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার রাস্তা রয়েছে।বাড়ির সামনের রাস্তার দু পাশে ফুল বাগান লাগানো।বর্তমানে রাজবাড়ী অনেক টা দখল হয়ে গেছে, কিছু যায়গা বড় বাজারের পাশে হওয়ায় এখানে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।


যেভাবে যাবেন: ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী থেকে হবিগঞ্জের বাসে করে খুব সহজে আসা যায় ।ভাড়াঃ জনপ্রিয় ৩৫০/৫৫০ টাকা কামড়াপুর ব্রীজ থেকে বানিয়াচংয়ে লোকাল বাস, বা সিএন জি দিয়ে যাওয়া যায়, ভাড় জনপ্রতি ৩০/৫০ টাকা।কোথায় থাকবেনঃ হবিগঞ্জ শহরে ভালোমানের আবাসিক হোটেল আছে সেখানে থাকতে পারবেন। কোথায় খাবেনঃ হবিগঞ্জ শহরে ভাল মানের খাবার হোটেল আছে সেখানে খেতে পারবেন। 

জমিদার বাড়ির প্রবেশ পথ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪