মুখে ছত্রাকের রোগঃ “ক্যান্ডিডিয়াসিস” health tips

মুখে ছত্রাকের রোগঃ “ক্যান্ডিডিয়াসিস” health tips মুখের ক্যান্ডিডিয়াসিস হলো মুখের এক প্রকার ছত্রাক জনিত প্রদাহ  যা Candida albicans নামক এক প্রকার ছত্রাক ও এর কয়েকটি প্রকরণ দিয়ে হয়ে থাকে। মুখের মধ্যে হওয়া ছত্রাকজনিত রোগের মধ্যে ক্যান্ডিডিয়াসিসই সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।


কি কারণে হয়?ক্যান্ডিডা(Candida) ছত্রাক মুখের একটি সাধারণ জীবাণু যা ৮০% সুস্থ মানুষের মুখেই পাওয়া যায়। তবে এরা কখন সংক্রমণের উপযোগী হয় তা কয়েকটি অবস্থার উপর নির্ভর করে বলে মনে করা হয়। যেমন:

ক. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অনাক্রম্যতা(Immunity) হ্রাস।

এর মধ্যে রয়েছে:

১.অনাক্রম্যতা কমিয়ে দেয় এমন রোগ যেমন: ডায়াবেটিস, এইডস।

২. অনাক্রম্যতা কমিয়ে দেয় এমন ঔষধ,  যেমনঃ স্টেরয়েড।

৩.উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার যা মুখের সাধারণ অণুজীব ধ্বংস করে দেয়।

৪.যাদের অনাক্রম্যতা এখনও পুরোপুরি গড়ে উঠেনি, যেমনঃ ছোট শিশু এবং যাদের অনাক্রম্যতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে, যেমনঃ অতি বৃদ্ধ।      

health tips

খ.মুখগহ্বর এর ভেতর বিভিন্ন অবস্থা, যেমনঃ

১.মুখে লালা প্রবাহ কমে যাওয়া

২.ধূমপান

৩.নকল দাঁত পরিধান 

রকমফের আছে কি?

মুখের ক্যান্ডিডিয়াসিস কয়েক ধরনে হয়ে থাকে

থ্রাশ( সাদা আবরণযুক্ত  ক্ষত)লালচে ক্ষত

দীর্ঘমেয়াদি পুরু ক্ষত 

কোথায় হয়?

ক্যান্ডিডিয়াসিস এর ক্ষত সাধারণত জিহবা, তালু, মাড়ি, গাল ও দুই ঠোঁটের সংযোগস্থলে  হয়ে থাকে।

লক্ষন ও উপসর্গ  কি?

ক্যান্ডিডিয়াসিস এর লক্ষণ হলো মুখে সাদা আবরণ  বা লালচে ক্ষত। 

উপসর্গগুলো হলোঃ

→মুখে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভব হওয়া।

→খাবার গ্রহনের সময় ঝাল লাগা ও মুখ পুড়ে গিয়েছে এমন অনুভব হওয়া। 

→স্বাদ না না পাওয়া 

→ অধিক লালা ঝরা। সাধারণত উপসর্গগুলো  থ্রাস ও লালচে ক্ষত এই ধরনের প্রদাহের ক্ষেত্রে প্রকটভাবে অনুভব হয় । দীর্ঘমেয়াদি পুরু ক্ষতের ক্ষেত্রে লক্ষন থাকলেও উপসর্গ যেমনঃব্যথা থাকে না।

রোগনির্ণয় কিভাবে হয়?   ক্যান্ডিডিয়াসিস নির্ণয় সাধারণত ইতিহাস ও লক্ষনের উপর ভিত্তি করেই করা হয়ে থাকে। তবে দীর্ঘমেয়াদী পুরু ক্যান্ডিডিয়াসিস এর ক্ষেত্রে বায়োপসি পরীক্ষার প্রয়োজন পরে লিউকোপ্লাকিয়া থেকে আলাদা করার জন্য।  


health tips bd

চিকিৎসা কি? মুখের ক্যান্ডিডিয়াসিস এর চিকিৎসা সাধারণত মুখের ভেতরের ছত্রাকনাশক জেল বা ড্রপ দিয়েই করা হয় যদিও দীর্ঘমেয়াদী পুরু ক্যান্ডিডিয়াসিস এর জন্য মুখে খাবার ছত্রাকনাশক এর প্রয়োজন পরে।

 তবে শুধু ছত্রাকনাশক ব্যবহারই এর চিকিৎসা নয়,  যেই সকল কারনে  ক্যান্ডিডিয়াসিস হচ্ছে তারও চিকিৎসা অত্যাবশ্যক ।  

আক্রান্ত হলে দ্রুত রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 প্রতিরোধের উপায়?

 ১.প্রতিদিন দুই বেলা অর্থাৎ রাতে খাবার পর ও সকালে নাস্তার পর সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করা।

২.প্রতিদিন রাতে দাঁত ব্রাশের পর ব্রাশ বা টাং ক্লিনার দিয়ে জিহবার উপরিভাগ পরিস্কার করা।

৩.রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরমর্শ ছাড়াই অহেতুক এন্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার না করা।

৪.স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার করলে, ব্যবহার এর পরপরই ব্রাশ দিয়ে জিহবা পরিস্কার করে ফেলা ও ভালো ভাবে কুলি করে ফেলা।  সম্ভব হলে স্পেসার ব্যবহার করা।

৫.নকল দাঁত ব্যবহার করলে তা রাতেরবেলা খুলে পানি বা এন্টিবায়োটিক দ্রবনে (যেমনঃ ক্লোরহেক্সিডিন) ডুবিয়ে রাখা ও তা নিয়মিত পরিস্কার করা।      

৬.ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা।

৭.ধূমপান পরিহার করা।

৮.শিশুদের দাঁত ও মুখ ভেজা-পরিস্কার-সুতির/ ফ্লানেল কাপড় দিয়ে পরিস্কার রাখা।        

৯.রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সুষম খাদ্য ও তাজা ফলমূল গ্রহণ করা। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪